পুরুলিয়া জেলার শবর কন্যা এবার ‘স্টার জলসা’র মঞ্চে।
শান্তনু দাস,পুরুলিয়া: সমাজের পিছিয়ে পড়া শবর সম্প্রদায়য়ের মেয়ে এবার ডাক পেলেন স্টার জলসার মঞ্চে।স্টার জলসার সুপারস্টার পরিবার সিজন টু’তে শুটিং করে দেখিয়ে দিলেন তারা আর পিছিয়ে নেই।আর পাঁচটা সম্প্রদায়ের মতো শবর সম্প্রদায়ও পৌঁছাচ্ছে শিক্ষার আলোতে।
পুরুলিয়া জেলার বরাবাজারের প্রত্যন্ত ফুলঝোর গ্রামের মেয়ে বসুমতী শবর।ছোট থেকেই প্রতিনিয়ত চরম দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়ে ওঠা তার।তারপরই গ্রামের ছেলে তথা কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কনস্টেবল শবর বাবা নামে পরিচিত অরূপ মুখার্জীর ছত্রছায়ায় শিক্ষার আলোতে আসা তার। মাঝপথে অর্থের অভাবে পড়াশোনায় ইতি টেনে দেওয়া বসুমতী শবর এখন অরুপ মুখার্জীর আর্থিক সহায়তায় ও প্রবল প্রচেষ্টায় উঠে এসেছে স্নাতক স্তরে।গত রবিবার দিন অরুপ মুখার্জী ও তার স্ত্রী এষা মুখার্জ্জীকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় পাড়ি দেয় লড়াকু শবর কন্যা বসুমতী।সেখানে গিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত সুপারস্টার পরিবার সিজন টু’তে শুটিং করেন বসুমতী।কিভাবে, কার সহযোগিতায় তার শিক্ষার আলোতে আসা সমস্ত কিছুই শুটিংয়ের মঞ্চে তুলে ধরেন বসুমতী।
শবর কন্যা বসুমতী বলেন,”স্যার অরুপ মুখার্জীর জন্যই আজ এতদূর আসা আমার।তিনি না থাকলে আজ হয়তো শিক্ষা কাকে বলে জানতেই পারতাম না।সত্যিই আমাদের এই শবর সম্প্রদায়কে অনেকেই পিছিয়ে পড়া জনজাতি বলে।কারণ এখনো আমরা আমাদের সমাজের বিন্দুমাত্র উন্নতি করতে পারিনি। তবে আজ অরুপ স্যার দেখিয়ে দিলেন শবর সম্প্রদায়ের কন্যাও উন্নয়নের আলোতে পৌঁছাতে পারে।পৌঁছাতে পারে শিক্ষার আলোতে।শুধু চাই অরুপ স্যারের মতো একটি সহৃদয় ও মহান ব্যক্তির হাত।
অপরদিকে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কনস্টেবল তথা শবর বাবা অরুপ মুখার্জী বলেন,”ছোট থেকেই দেখে এসেছি শবরদের করুণ দুর্দশা।তাই ছোট থেকেই প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলাম জীবনে যদি প্রতিষ্ঠিত হতে পারি তাদেরকে পিছিয়ে পড়া জনজাতির তকমা গোছাবো।আর তাই কলকাতা পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর ২০১১ সালে নিজের পয়সায় ‘পুঞ্চা নবদিশা মডেল স্কুল’ তৈরি করি তাদের জন্য।যে স্কুলে আজ ১২৬ জন শবর ছেলেমেয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়াশোনা করছে।আমি চাই আর পাঁচটা জনজাতির মতো তারাও পিছিয়ে না থেকে উন্নয়নের আলোতে এগিয়ে আসুক।এগিয়ে আসুক শিক্ষার আলোতে।অরুপ মুখার্জী আরও বলেন,লড়াকু শবর কন্যা বসুমতী শবররের আগে ২০১৮ সালে রোপিতা নামেও এক শবর কন্যা জি’বাংলা দিদি নং ওয়ানের মঞ্চও গিয়েছিলেন।আশা রাখবো আগামীদিনে আমার স্কুলে পড়া প্রত্যেকটা মেয়েই এইভাবে উন্নয়নের আলোতে পৌঁছে শবর সম্প্রদায়কে পিছিয়ে পড়া তকমা গোছাবে।